উদ্বোধন না হতেই আশুগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ফাটল ‍ও ধস - রাষ্ট্রীয় ব্লগ | রাষ্ট্রীয় ব্লগ | জাতীয় ও মানবিক ঐক্যপ্রয়াস
  • নাগরিক সাংবাদিকতা

    উদ্বোধন না হতেই আশুগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ফাটল ‍ও ধস

      প্রতিনিধি ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ , ৬:২১:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    জহির সিকদার,আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ

    নির্মাণের প্রায় আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও দু-একটি কারনে আশুগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। যার পরনা্ই প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন না হওয়ার আগেই  গড়ে উঠা  নতুন ভবনের পার্কিং বেজমেন্ট ও নিরাপত্তা দেয়ালের একাংশ ধসে পড়েছে।

    দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকার কারনে  চুরি হয়ে গেছে ভবনের ৪০টি বৈদ্যুতিক পাখা ও স্যানিটারি সরঞ্জাম।

    এগুলো চুরি হয়েছে নাকি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহই করেনি এমন সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মনে। এ ছাড়া আড়াই বছরেই ধসে পড়ায় ভবনটির নির্মাণকাজের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মধ্যে।
    মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় চারতলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মিত হয়। দরপত্রের মাধ্যমে ভবনটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টার লাইট সার্ভিসেস ও মেসার্স উদয়ন বিল্ডার্স (জেবি)।

    দুই কোটি ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ১৭৫ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি ২০২০ সালের জুন মাসের প্রথম দিকে উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডির কাছে হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

    জানা গেছে, হস্তান্তরের পর উপজেলা প্রশাসন ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার উদ্যোগ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে দিয়ে ভবনটি উদ্বোধন করার দাবি জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের ঠেলাঠেলিতে হস্তান্তরের প্রায় আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও উদ্বোধন হয়নি। ফলে নির্মাণের পর থেকে ভবনটি পরিত্যক্ত ও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চুরি হয়ে গেছে সোলার প্যানেলের ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, সুইচ, সুইচ বোর্ড, ওয়াশরুমের সব স্টিলের ট্যাব ও বৈদ্যুতিক পাখা।

    এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী পৃথুল ভৌমিক জানান, বেজমেন্টের নিচের বালু সরে যাওয়ায় তা দেবে গেছে। তবে হেলে পড়া নিরাপত্তা দেয়াল মূল ভবন থেকে আলাদা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে। তার নির্দেশ মতো প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হবে।

    এ বিষয়ে নিয়ে কথা হয় মুক্তিযুদ্ধের গ্রুপ কমান্ডার মোজাম্মেল হোসেন গোলাপ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম আজাদ ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমের সাথে। তাদের দাবি, আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ হলেও উদ্বোধন না হওয়ায় এটি কোনো কাজে আসছে না। এটি চালু হলে দোকান ও হলরুম ভাড়া দিয়ে যে আয় হতো তা দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেয়া সম্ভব হতো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে অর্থ ব্যয় করা যেত।

    তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারি তোফায়েল আলী রুবেল জানান, তিন বছর আগেই ভবনটির কাজ শেষে উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সব কিছু শিডিউল অনুযায়ী বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এখানে তাদের কোনো গাফিলতি নেই। খালের ওপর মাটি ভরাট করে পার্কিং বেজমেন্ট করায় তা ধবসে গেছে। প্রশাসন চাইলে সংস্কার কাজে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করা হবে।

    মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জিনিসপত্র চুরি, পার্কিং বেজমেন্ট ও দেয়াল ধসের কথা স্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অরবিন্দ বিশ্বাস। তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে সরেজমিন পরিদর্শনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্রুত এটি সংস্কার ও উদ্বোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ