এদেশে ড্রোন প্রযুক্তির সমৃদ্ধি চাই-শাওন - রাষ্ট্রীয় ব্লগ | রাষ্ট্রীয় ব্লগ | জাতীয় ও মানবিক ঐক্যপ্রয়াস
  • তথ্যপ্রযুক্তি

    এদেশে ড্রোন প্রযুক্তির সমৃদ্ধি চাই-শাওন

      প্রতিনিধি ২৭ এপ্রিল ২০২৩ , ৮:৫৬:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

    রাষ্ট্রীয় ব্লগ রিপোর্টঃ
    ড্রোন মূলত মনুষ্যবিহীন আকাশযান। রোবটিক সিষ্টেম, ডিভাইস, অরবিট, সেন্সর অথবা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে এটিকে চালনা করা হয়। ড্রোনের সাহায্যে অনেক কঠিন কাজ সহজ ভাবে করা যায়। ড্রোনের সাথে সংযুক্ত ক্যামেরার মাধ্যমে একটি সুনির্দিষ্ট এলাকার চিত্র ধারণ করা যায়। নাটক-সিনেমাতেও এখন ড্রোনের মাধ্যমে চিত্র ধারণ করা হয়। ফটোগ্রাফাররা UAV-গুলি এরিয়াল ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করে।
    কৃষিজমিতে সার-কীটনাশক ছিটানোর জন্য বিশেষ ধরনের ড্রোন ব্যবহার করা হয়। জরুরী ওষুধ-ইঞ্জেকশন এবং টিকা ডেলিভারি দেয়া, খাবার ডেলিভারী দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পণ্য ডেলিভারীর কাজেও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
    ড্রোনকে “Unmanned Aerial Vehicles” (UAV) বলা হয়। সামরিক কাজ থেকে শুরু করে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ড্রোন এর ব্যবহার নিয়মিত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
    একটি সাধারণ (UAV) ও অপরটি সামরিক (UAV)। সাধারণ UAV গুলোতে মুলত একটি ক্যামেরা, পাখা (প্রোপেলার), আর কিছু সেন্সর থাকে। যা তাকে আকাশে উড়তে এবং সঠিক পথে যেতে সাহায্য করে। আর সামরিক UAV গুলোতে থাকে ককপিট, স্পাই ক্যামেরা, লেজার, জিপিএস, সেন্সর, লাইটিং সেন্সর ইত্যাদি। ড্রোনের মূলত দুটি অংশ থাকে- একটি হচ্ছে ড্রোন নিজে ও অপরটি হচ্ছে এর কন্ট্রোলার সিস্টেম। গ্রাউন্ড কন্ট্রোলার নিজে নির্দেশ দেয় আর সেটা উপগ্রহ হয়ে ড্রোন এর নিকটে যায়, ড্রোন সেটা গ্রহন করে সে কমান্ড অনুসারে কাজ করে। বর্তমানে তুরষ্ক, ইরান ও রাশিয়ার ড্রোনগুলোর শক্তিক্ষমতা পৃথিবী জুড়ে সমাদৃত।
    অনেকে ড্রোনকে কোয়াড কপ্টার বলে থাকেন। তবে সিম্পল একটি কোয়াড কপ্টার বা মিনি ড্রোন তৈরী করতে গেলে যা যা প্রয়োজন-
    ১. BLDC Motor 1400 KV
    ২. ESC (Electronic Speed Control) BLDC Motor কন্ট্রোল করার জন্য।
    ৩. Propeller বা পাখা
    ৪. APM Shock Vibration Absorber
    ৫. KV 2.15 Flight Controller Board
    ৬. 11.1 Volt Lipo Battery
    ৭. Lipo Battery Charger
    ৮. Quad Copter Frame DJI F450
    ৯. Trans meter & Receiver (FLYSKY FS-16 AFHDS TX-RX2.4G)
    ১০. FPV গগলস বা ডিসপ্লে।
    ড্রোন কিভাবে কাজ করেঃ
    ড্রোনে ডিসি মটর এর সাথে প্রোপেলার বা পাখা সংযুক্ত করা হয়। যার আরপিএম গতি যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। বাতাসকে কাজে লাগিয়ে ড্রোন উড়তে সক্ষম হয়। ড্রোনে যদি চারটি মটর সংযুক্ত প্রোপেলার থাকে তাহলে দুটি Clock wise ও দুটি Anti Clock wise বা Counter Clock আকারে ঘুড়াতে হবে। আর যদি বেশী মটর সংযুক্ত প্রোপেলার হয় তাহলে সমানুপাতিক হারে অর্ধেক প্রোপেলার Clock wise এবং অবশিষ্ট প্রোপেলার Anti Clock wise ঘুড়াতে হবে। অন্যথায় ড্রোনকে সঠিক বা নির্দেশিত গতিপথে পরিচালনা করা যাবেনা। মাটি থেকে ড্রোনকে উপড়ে তুলতে নীচের বাতাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হয়, তাহলে নীচের চাপে উপড়ের বায়ুর স্থান শুন্য হলে ড্রোন সেখানে অবস্থান গ্রহন করবে। সামনের দিকে নিয়ে যেতে হলে সামনের মটরের স্পিড কমিয়ে পিছনের গুলোর স্পিড বাড়িয়ে দিতে হবে। পিছনের দিকে নিয়ে যেতে হলে পিছনের মটরের স্পিড কমিয়ে সামনের গুলোর স্পিড বাড়িয়ে দিতে হবে। এভাবে ডানে-বামে অথবা উপরে-নীচে করতে হলে মটরের স্পিড কমানো বা বাড়ানোর কারণে সঠিকভাবে ড্রোন পরিচালনা সম্ভব। কোন বস্তুকে বাতাসে ভাসমান রাখতে বা উড়াতে গেলে বস্তুর ওজনের চেয়ে বাতাসের শক্তি দ্বিগুণ করতে হবে। এবং বাতাসের ওপর দ্বিগুণ পরিমাণ চাপ প্রয়োগ করে বায়ুমন্ডলের অত্র স্থানের বাতাসকে হালকা করতে হবে। তাহলে সে বস্তু বা জিনিসটি বাতাসে অনায়াসে ভাসমান বা উড়তে পারবে। কৌণিক ভরবেগ, ভরবেগের ভ্রামক বা কৌণিক ভ্রামক ও টর্ক সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
    ড্রোনে সোলার প্যানেল সিষ্টেম সংযুক্ত করা গেলে ব্যাটারি রিচার্জ করার প্রয়োজন হবেনা। তার সাথে বায়ুবিদ্যুৎ প্যানেল কাজে লাগিয়ে ড্রোনকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
    বাংলাদেশে ড্রোন ক্যামেরা বা ড্রোনের ব্যবাহার “ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা ২০২০” এর মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট করে গেজেট আকারে করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সেখান থেকে আইনগত ভাবে ড্রোন ব্যবহারের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন প্রকারের প্রযুক্তিগত ড্রোন উদ্ভাবনে সরকারের সু-দৃষ্টি প্রয়োজন এবং ড্রোন প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশই হোক আগামীর প্রজন্মের উৎকর্ষ।
    ওমায়ের আহমেদ শাওন
    (লেখক, উদ্ভাবক ও বিজ্ঞান গবেষক)।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ