রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কয়েকটি মোজেজা - রাষ্ট্রীয় ব্লগ | রাষ্ট্রীয় ব্লগ | জাতীয় ও মানবিক ঐক্যপ্রয়াস
  • ধর্ম ও জীবন

    রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কয়েকটি মোজেজা

      প্রতিনিধি ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১২:০৩:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

    মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসানঃ

    আঙ্গুল মোবারক থেকে পানি বের হওয়ার মুজিজা –
    হজরত জাবের (রাঃ)হতে বর্ণীত যে,হোদায়বিয়ায় হজরত সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)গণ পিপাসায় ক্লান্ত ছিলেন। হুজুর (সাঃ) এর সামনে একটি পাত্রে সামান্য পানি ছিল।তিনি তা দিয়ে ওযু করলেন। সাহাবায়ে কেরামগণ আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)! আপনার পাত্রের এই অল্প পানি ছাড়া আমাদের কারো কাছেই কোনো পানি নেই, যা-দিয়ে আমরা ওজু করবো ও পান করাবো।
    তখন হুজুর (সাঃ) নিজ হাত মোবারক উক্ত পাত্রের ভিতর রাখলেন।
    হুজুর (সাঃ) নিজ হাত পাত্রে রাখার সাথে সাথেই আঙ্গুল মোবারক থেকে পানি প্রবাহিত হতে লাগলো।
    হজরত জাবের (রাঃ) বলেন, আমরা সকলেই সেই পানি পান করি এবং অজু করি।
    হজরত জাবের (রাঃ)কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, আপনারা কতজন ছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন যে,এক লক্ষ মানুষ হলেও সে পানি যথেষ্ট হতো। কিন্তু আমরা দেড় হাজার মানুষ ছিলাম।

    চাঁদ দুই টুকরো হওয়ার মুজিজা-
    (২)হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) মদিনায় হিজরত করার প্রায় পাচ বছর পূর্বে একদিন মক্কার মুশরিকরা মোহাম্মদ (সাঃ) এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললো, যদি আপনি সত্য নবী হয়ে থাকেন তাহলে আকাশের চাঁদকে দুই টুকরো করে দেখান।রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন আমি মুজিজা দেখাতে পারি, তবে কি তোমরা ইসলাম গ্রহণ করবে?
    তারা বললেন হ্যাঁ, করবো।
    রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে নিজ আঙ্গুল মোবারক দ্বাএয়া ইশারা করলেন। সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ দুই টুকরো হয়ে গেলো। এক টুকরো আবি কুবাইস পাহাড়ে আর অন্য টুকরো কাইকাআন পাহাড়ে পতিত হলো। সেটি ছিল পূর্নিমা চাঁদ।

    বকরি থেকে দুধ দোহন করার মুজিজা –
    (৩) হজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ)এর দরবারে সাহাবায়ে কেরামদের এক জমাত বসা ছিলেন। রাসুল (সাঃ) তাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে একজন খাদেমকে পাঠালেন নিজ ঘরে। খাদেমকে বললেন ঘরে কিছু আহারাদি থাকলে নিয়ে এসো। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ঘরে কিছুই পাওয়া গেলো না।
    তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর চোখে এক বকরি পড়লো। যা এখনো বড় ও হয়নি, বাচ্চা ও দেয়নি। এই বকরি থেকে দুধ দোহন করা কেউ কল্পনা ও করেনি।কিন্তু হুজুর (সাঃ) এই বকরির বাচ্চা থেকে এক পেয়ালা দুধ দোহন করে স্ত্রীগণের নিকট পাঠালেন এবং পূনরায় সেই বাচ্চা থেকে দুধ দোহন করে সকলে তৃপ্তিসহ পান করলেন।

    (৪) শুকনো গাছে তরতাজা খেজুর -রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ঘরে বসে আছেন। হজরত আবুবকর (রাঃ) ও হজরত উমর (রাঃ) এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কিছু খাইনি।রাসুল (সাঃ)বললেন কেন কি হয়েছে? দুইজন ই বললেন, আমরা পেটে পাথর বেধে আছি,কয়েকদিন হলো কিছুই খাইনি। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, তোমাদের পেটে তো একটি পাথর বাধা রয়েছে। কিন্তু তোমাদের নবীর পেটে দুইটি পাথর বাধা।
    এরমধ্যেই এক সাহাবী এসে বললেন, আল্লাহর রাসুল, আমি আসরের নামাজের পর হজরত মিকদাদ ইবনে আসওয়াদের ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তার ঘরে দেখলাম খেজুরের স্তূপ।
    হুজুর (সাঃ) তখন মিকদাদ বিন আসওয়াদের ঘরে গেলেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মিকদাদ বিন আসওয়াদকে বললেন, মিকদাদ, আমরা কিছুই খাইনি। তাই আবুবকর ও উমরকে নিয়ে চলে আসলাম যে, চলো মিকদাদের ঘরে খেজুর রয়েছে কিছু খেয়ে আসি।
    এই কথা শুনে মিকদাদ বিন আসওয়াদ কাদতে লাগলেন, রাসুল (সাঃ) বললেন হে মিকদাদ তুমি কাদছো কেন?
    মিকদাদ বিন আসওয়াদ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আজ আপনি আমার ঘরে এসেছেন, কিন্তু আমার ঘরে আজ কিছুই নেই। খেজুরের যে স্তূপ ছিল, নামাজের আগেই আমি মদিনার গরীব মিসকিনদের মাঝে বন্টন করে দিয়েছি।এখন আমার ঘরে একটা খেজুর ও নেই।
    এই আক্ষেপে মিকদাদের চোখে পানি এসে গিয়েছিল, তা দেখে রাসুল (সাঃ) এর দয়ার সাগরে জোশ এসে যায়।
    রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, এখানে কি কোনো গাছ আছে? মিকদাদ বললেন, এখানে তো কোন খেজুর গাছ নেই, তবে একটা শুকনো খেজুর গাছ আছে।
    রাসুল (সাঃ) নিজ চাদর দিয়ে বললেন, যাও, শুকনো খেজুর গাছের নিচে এই চাদর বিছিয়ে বলবে নবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ)তোমার কাছে খেজুর চাচ্ছে ।
    মিকদাদ (রাঃ) কথামতো চাদর নিয়ে বিছিয়ে বললেন নবী (সাঃ) তোমার কাছে খেজুর চাচ্ছে। দেখি মুহূর্তের মধ্যে শুকনো খেজুর গাছটি তরতাজা হয়ে গাছ থেকে খেজুর ঝরে পড়তে লাগলো। কিছুক্ষণের মধ্যে ই চাদর খেজুরে ভরপুর হয়ে গেল। চাদরটি উঠিয়ে রাসুল (সাঃ) এর নিকট নিয়ে আসি।
    তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, হে মিকদাদ, তুমি যদি চাদরটি না উঠাতে তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত এই গাছ থেকে খেজুর পড়তে থাকতো।

    (৫) এক পেয়ালা দুধে আশি জন পান করার বরকত-
    হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণীত, তিনি বলেন, হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) আমাকে নিয়ে নিজ ঘরে এবং এক পেয়ালা দুধ নিয়ে আমাকে নির্দেশ করলেন, হে আবু হুরায়রা, আসহাবে সুফফার সকলকে আসতে বলো।
    আসহাবে সুফফার সকলে আসার পর বললেন সকলকে দুধ পান করাও।আমি সকলকেই দুধ পান করাতে শুরু করলাম। সকলেই তৃপ্তি সহকারে দুধ পান করলেন।
    এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, হে আবু হুরায়রা, এখন তুমি নিজে পান করো।আমি পান করলাম।পূনরায় পান করতে বললেন। আমি আবার পান করলাম।পরবর্তীতে বলার পর আমি বললাম হে আল্লাহর রাসুল, আমার পেটে তো আর জায়গা নেই।
    তারপর বাকিটুকু হুজুর (সাঃ) নিজে পান করলেন।
    দুধ ছিলো মাত্র এক পেয়ালা, পান করলেন আশি জন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ