মসজিদের বরাদ্দের অর্থ আত্মসাত:সংবাদ প্রকাশের জেরে মামলার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত - রাষ্ট্রীয় ব্লগ | রাষ্ট্রীয় ব্লগ | জাতীয় ও মানবিক ঐক্যপ্রয়াস
  • নাগরিক সাংবাদিকতা

    মসজিদের বরাদ্দের অর্থ আত্মসাত:সংবাদ প্রকাশের জেরে মামলার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

      প্রতিনিধি ১০ জানুয়ারি ২০২৩ , ৮:১৮:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধা।

    সকল কলম সৈনিক এক হও, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি বন্ধ করো করতে হবে ৷ এই স্লোগানে প্রেসক্লাব গাইবান্ধার আয়োজনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হত্যা মামলা চিহৃিন্ত আসামী খুনি চেয়ারম্যান মুসাব্বির হোসেনের বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশ করায় ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, জেলা প্রতিনিধি নুর আলম আকন্দ রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রেসক্লাব গাইবান্ধা এবং জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দুর্নীতিবাজ আতাউর রহমান সরকার আতা ও তার জামাতা আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি’র সংবাদ প্রকাশ করায় প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সিনিয়র সহ-সভাপতি দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক স্বাধীন সংবাদ রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি রবিন সেন এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    আজ ১০ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে ডিবি রোডে তিনঘন্টা ব্যাপি এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

    প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসেনের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গাইবান্ধার পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার প্রেসক্লাবসহ পাঁচটি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে হয়রানিমূলক এই মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে গত রোববার (৮জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব গাইবান্ধায় এক জরুরী বৈঠকে আজকের এই মানববন্ধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের বরাবর স্বারকলিপি প্রদান এবং আগামী রোববার সকাল ১১টা থেকে প্রেসক্লাব গাইবান্ধা কার্যালয়ের সামনে আধাবেলা সাংবাদিকদের প্রতীকী গণঅনশনসহ কলম-ক্যামেরা বিরতির কর্মসূচিও রয়েছে।

    প্রতিবাদ কর্মসূচির শুরুতে দুর্নীতি ও সংবাদের মূল ঘটনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মামলার শিকার ঢাকা পোস্টের গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন আকন্দ এবং প্রেসক্লাব গাইবান্ধার দপ্তর সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ।

    অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান রাজু, ৭১ টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি শামীম আল সাম্য, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মিলন খন্দকার, পলাশবাড়ির রিপোর্টাস ইউনিটি সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, পলাশবাড়ি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রতন, জিটিভির গাইবান্ধা প্রতিনিধি গোপাল মহন্ত, পলাশবাড়ী সচেতন নাগরিক সমাজ এর সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম লিয়াকত, ফুলছড়ি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান বাবু, মোহনা টিভির জেলা প্রতিনিধি রাসেল কবির, রবিন সেন, সময় টিভির বিপ্লব ইসলাম, নয়া শতাব্দির মাসুম লুমেন, শাহজাহান সিরাজ, লাঁলচান বিশ্বাস সুমন, সালাম আশেকি ও জোবাইদুর রহমান জুয়েলসহ অন্যান্যরা।

    এসময় নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভকে আজ রাস্তায় নামতে হয়েছে। চেয়ারম্যান মোসাব্বির মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করার যে অপ-পায়তারা করেছে তা ফলপ্রসু করতে দেওয়া হবেনা।

    চেয়ারম্যান মসজিদের অর্থ আত্মসাতও করবেন, সাংবাদিকের নামে মামলাও করবেন এটা মানা যায়না। এসময় বক্তারা চেয়ারম্যানের একাধিক দুর্নীতির তুলে ধরে বলেন, চেয়ারম্যান মোসাব্বির একজন গরু চোরের গডফাদার, দীর্ঘদিন থেকেই তিনি গরু চুরির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি ওই ইউনিয়নের সবধরনের জুয়ার সাথে জড়িত। তিনি ২০২১ সালে একটি হত্যা মামলার জেলখাটা আসামি। এমন কোনো দুর্নীতি নেই যা চেয়ারম্যান মোসাব্বিরের বিরুদ্ধে নেই।

    এসময় বক্তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত বিষয়টির শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা।

    অন্যদিকে, প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সহ-সভাপতি রবিন সেনের নামে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের জামাতার মানহানির মামলারও তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।

    উল্লেখ্য, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) সাধারণ এর দ্বিতীয় পর্যায়ের উপজেলা ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়নের রোস্তমের মোড়ে অবস্থিত নূরে রহমত জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ হওয়া টিআর এর ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে মসজিদ কমিটির হাতে মাত্র ১৪ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৪১ হাজার টাকা প্রকল্প সভাপতি মহিলা সদস্যর স্বামী মাহবুর রহমানসহ ছয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যান মোসাব্বির ভাগ বাটোয়ারা করে নেন।

    এছাড়া ইউনিয়নের অপর একটি প্রকল্প “জগৎরায় গোপালপুরের জাবালে রহমত জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয় ৫৭ হাজার টাকা। ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বির ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি আবুল হোসেনকে প্রকল্প সভাপতি বানিয়ে মসজিদে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৩২ হাজার টাকা একাই আত্মসাত করেন। এমন অভিযোগে গত ১৬ নভেম্বর “ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দেশ সেরা বেশ কয়েকটি মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল ৷

    “ঢাকা পোস্ট ডটকম” মসজিদ সংস্কারের সরকারি অর্থ চেয়ারম্যান মোসাব্বির আত্মসাত করার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে এলাকায় বেশ চাঞ্চ্যল্যের সৃষ্টি হয়। ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এমন দূর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে গত ৮ জানয়ারি ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিপন আকন্দের নামে হয়রাণীমূলক, মিথ্যা চাঁদাবাজি ও আইসিটি আইনে মামলা করেন গরু চোর খ্যাত, হত্যা মামলার জেলখাটা আসামি চেয়ারম্যান মোসাব্বির।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ