যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ায় গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা - রাষ্ট্রীয় ব্লগ | রাষ্ট্রীয় ব্লগ | জাতীয় ও মানবিক ঐক্যপ্রয়াস
  • আন্তর্জাতিক

    যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ায় গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা

      প্রতিনিধি ২ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৫:০৯:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    রাষ্ট্রীয় ব্লগ ডেস্কঃ 

    হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি ভেঙ্গে যাওয়ার দ্বিতীয় দিনে শনিবার ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে।
    হামলা থেকে ধূসর ধোঁয়ায় গাজার আকাশ  মেঘ ঢেকে আছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় বলেছে, যুদ্ধ বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শুক্রবার প্রথম দিনে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২শ’ জন নিহত হয়েছে।
    উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস এটি শেষ হওয়ার আগেই একটি রকেট নিক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল এবং মুক্তির জন্য আরও জিম্মিদের তালিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

    ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখন যা করছি তা হল গাজা উপত্যকায় হামাসের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো।’
    আন্তর্জাতিক নেতারা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধে ফিরে আসার নিন্দা করেছে।
    জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক্স-এ (পূর্বে টুইটারে) বলেছেন, ‘আমি গভীরভাবে দুঃখিত যে, গাজায় আবার সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে।

    সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী দামেস্কে হামলা চালিয়েছে।
    হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা বলেছে, শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় তাদের একজন সদস্য নিহত হয়েছে।
    সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা বেড়েছে।
    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা আরেকটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য আঞ্চলিক অংশীদারদের সাথে কাজ করছে।
    মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা ইসরায়েল, মিশর এবং কাতারের সাথে যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

    ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আকাশ ও স্থল অভিযান চালিয়েছে। গাজা পরিচালনাকারী হামাস কর্তৃপক্ষ বলছে, এতে ইসরায়েল ১৫,০০০ এরও বেশি লোককে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোক।
    শুক্রবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছে এবং হামাস এখনও ‘১৭ নারী ও শিশুসহ ১৩৬ জনকে জিম্মি করে রেখেছে’।
    মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দুবাইতে সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ‘সবাইকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার’ এবং ‘যে প্রক্রিয়াটি সাত দিন ধরে কাজ করেছিল তা অনুসরণ করার বিষয়ে নিবিড়ভাবে মনোনিবেশ করেছে’।
    ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে,‘স্থল, বিমান এবং নৌ বাহিনী খান ইউনিস এবং রাফাসহ গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণে হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।’
    এএফপি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গাজা শহরের আল-আহলি হাসপাতালের বাইরে, একটি নীল সোয়েটার পরা এক ব্যক্তি শোকে কাতর হয়ে একটি বডি ব্যাগে মৃত ছেলেকে দেখার পর তার মুখ ও হাত আকাশের দিকে তুলে ধরছেন।

    গুতেরেস গাজায় একটি ‘মানবিক বিপর্যয়’ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, যেখানে জাতিসংঘ বলেছে যে ১৭ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব রয়েছে।
    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ঊর্ধ্বতন জরুরি কর্মকর্তা রব হোল্ডেন গাজা থেকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙ্গে পড়েছে।’
    এখানকার পরিস্থিতি একটি ‘একটি ভূতের সিনেমার মত।’
    খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের একটি বিছানায় আমাল আবু দাগ্গা কাঁদছিলেন। তার ওড়না রক্তে ভেসে যাচ্ছিল।

    তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এমনকি জানি না আমার বাচ্চাদের কী হয়েছে’
    জামিল আবু দাগ্গা নামের এক আত্মীয় এএফপি’কে জানান, বোমা পড়ার সময় পরিবারটি বাড়িতেই ছিল।
    সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চলাকালীন, হামাস ৮০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে এবং ইসরায়েল ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি দেয় এবং গাজায় আরও বেশি সাহায্য প্রবেশ করে।

    সূত্র – বাসস 

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ